Posts

Showing posts from August 24, 2018

গল্পঃ কোরবানির শান্তগরু | কবির কাঞ্চন

Image
এইমাত্র স্কুল থেকে বাসায় ফিরেছি। বাসার সিঁড়িতের পা রাখতেই আমার একমাত্র ছেলে সাঈদের দিকে দৃষ্টি পড়ে। এক মুহূর্তের জন্য থমকে গেলাম। ওর চোখেমুখে আনন্দ। খুব ব্যস্ত সময় পার করছে। উঠোনে তিনটি গরু আছে। লালগরু, সাদাগরু ও কালোগরু। আমাদের পাশের বাসার লোকেরা কোরবানির উদ্দেশ্যে গতকাল কোরবানির হাট থেকে কিনে এনেছেন। গতকাল রাত থেকে সাঈদের দৌড়াদৌড়ি বেড়ে গেছে। রাতে ঘুমোতে যাবার কালে ও বারবার জিজ্ঞেস করেছে। কখন আমাদের গরু কিনবে, বাবা। কালকে নিয়ে আসো না। সবাই গরু নিয়ে এসেছে। শুধু আমাদের গরুটা------।  এই কথা বলে মন খারাপ করে বালিশে মুখ লুকিয়ে রাখে। আমি আলতো করে ধরে ওর মুখে, কপালে চুমো খেয়ে বললাম, - আর মন খারাপ করতে হবে না। আগামীকালই আমাদের কোরবানির গরু কিনব। সাঈদ মুখে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল, - আমায় নিবে না, বাবা? আমি বিস্মিত চোখে বললাম, - কোরবানির গরু কিনতে হাটে যাবো। আর আমার বাপজানকে সাথে নেবো না। এ কি হয়! সাঈদ হঠাৎ দাঁড়িয়ে আমার কপালে চুমো খেয়ে বলল, - ধন্যবাদ, বাবা। এ জন্যই তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো বাবা।  ওর মুখে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা শুনে আমার খুব ভালো লাগে। এরিমধ্যে আমার স্ত্রী সবকিছু গুছিয়ে

গল্পঃ ফাহিমার স্বপ্ন | মির্জা মুহাম্মদ নূরুন্নবী নূর

Image
ঘরের জানালা খুলে দাঁড়ালেন ফাহিমা। তাকালেন নীলিম আকাশের পানে। আপন মনে দেখছেন বিশ্বপ্রকৃতি। দেখছেন নীল আকাশ। সবুজ বনানী। দেখছেন গাছগাছালি। সবুজের মাঠ। ধানের খেত। সরষে ফুলের হাসি। প্রজাপতির উড়াউড়ি। পাখিদের নাচানাচি। দোয়েলের শীষ দোলানো নৃত্য। শিশিরভেজা দূর্বাঘাস। খালি পায়ে হেঁটে চলা টোকাই। ছেঁড়া জামা গায়ে এগিয়ে চলা পথশিশু। শীতে কাঁপছে ওদের কচি দেহ। কোমল প্রাণ। তবুও জীবনের তাগিদে এগিয়ে চলছে ওরা। সামনে। ক্রমাগত লক্ষ্যপানে। এসব দেখছেন ফাহিমা। একান্ত আপন মনে। আপনার করে। দেখছেন আর ভাবছেন। ভাবছেন আর হারিয়ে যাচ্ছেন অন্য জগতে। অন্য ভুবনে। বিবেক তাড়িত জমিনে। আহত আত্মার বিচরণ মাঠে। মাঠকর্মী হয়ে। আবারও বাইরে তাকালেন ফাহিমা। চোখ গিয়ে পড়ল রাস্তায়। মানুষের হেঁটে চলা জমিনে। মেঠোপথে। দেখলেন আরেকজন টোকাই হাঁটছে। গায়ে ছেঁড়া জামা। পায়ে নেই জুতো। এই কঠিন শীতে এগিয়ে যাচ্ছে সামনে। যোদ্ধাবেশে। যোদ্ধা সেজে। জীবনের তাগিদে। প্রয়োজন পূরনে। মানবতা রক্ষায়। জীবন বাঁচানোর জন্য। মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে। ওকে দেখে হোঁচট খেলেন ফাহিমা। আর স্বাভাবিক থাকতে পারলেন না তিনি। বিবেক তাড়িত হলেন খুব বেশি। অনেক কষ্ট

গল্পঃ শরতের সকালে | মির্জা মুহাম্মদ নূরুন্নবী নূর

Image
পাখিদের কূজনে ঘুম ভাঙে জাহিদের। আবারও ঘুমানোর চেষ্টা করে সে। এপাশ-ওপাশ কাটতেই সালাতুল ফজরের আযানের সুর ধ্বনি কানে বাজে ওর। আর ঘুমাতে পারেনা জাহিদ। বিছানা ছেড়ে নেমে আসে রাস্তায়। ধীর পায়ে এগিয়ে যায় নদীর পাড়ে। যমুনার পাড়। এমন সকালে খালি পায়ে নদীর পাড়ে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা! নবম শ্রেণীর ছাত্র জাহিদ প্রতিদিনই এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করে থাকে। আজও সে এগিয়ে এসেছে নদীর পাড়ে। যমুনার তীরে। নদীর তীরে সে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপন মনে। একান্ত হৃদয়ের জানালা খুলে। ঘুরে ফিরে দেখছে প্রকৃতির হাতছানি! স্নিগ্ধ সকালের কোমল পরশ! কাশফুলে ঘেরা যমুনার উদাস করা আকুলতা! নদীর কলতান! পাখিদের কুহুতান। সূর্যোদয়ের আবিলতা! জাহিদ এগিয়ে যায় সামনে। ক্রমাগত মঞ্জিলপানে। একটু এগুতেই চোখে পড়ে যমুনার ভাঙনের দৃশ্য। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বিঘা বিঘা ধানি জমি। জমির আবাদ। কৃষকের কলিজার ধন। বুকের মানিক। সবুজের স্বপ্নীল ছায়া। নিজের গ্রাম। গ্রামের মাটি। মাটির ফসল! জাহিদের চোখে পড়ে যমুনার ভাঙনের ভয়ঙ্কর চিত্র। যমুনার গর্জনে আৎকে ওঠে জাহিদের কচি প্রাণ! কোমল হৃদয়! যমুনার ভয়ঙ্কর এ দৃশ্য ওকে খুব করে ভাবিয়ে তোলে। পীড়া দেয় অনেক বেশি করে

শিশুতোষ গল্পঃ রাজকন্যা ও ব্যাঙ | মোনোয়ার হোসেন

Image
অনেক দিন আগের কথা। এক রাজার এক মেয়ে ছিল। তার নাম ছিল রাজকন্যা। রাজকন্যা দেখতে ছিল ভীষণ কিউট । তাই তার মনে খুব অহংকার ছিল। সবসময় সে সুন্দরকেই পছন্দ করত , আর ভালোবাসত। দেখতে বিচ্ছিরি এমন কাউকে দেখলে নাক ছিঁটকাত । ঘৃণায় তার শরীর রি রি করত । সেই রাজকন্যার ছিল একটি সুন্দর সোনালি রঙের বল । জন্মদিনে বাবা তাকে এই বল উপহার দিয়েছিল । বলটি ছিল রাজকন্যার ভীষণ পছন্দের। সব সময় এই বলটি নিয়েই খেলা করত সে। একদিন বিকেলে বলটি নিয়ে রাজপ্রাসাদের বাইরে বাগানে খেলছিল সে ।এমন সময় তার কাছে লাফাতে লাফাতে এল এক বিচ্ছিরি ব্যাঙ।  বলল, তোমার বলটি খুব সুন্দর ! আমাকেও তোমার সাথে খেলতে নিবে? বিচ্ছিরি ব্যাঙ দেখেই তো রাজকন্যার শরীর ঘৃণায় রি রি করে উঠল।  নাক কুঁচকে গেল। আর এই বিচ্ছিরি ব্যাঙ কিনা বলে তার সাথে  খেলতে হবে ! রাগে কাঁপতে লাগল রাজকন্যা ।  বলল, বিচ্ছিরি ব্যাঙ, তোমার এত সাহস হয় কি করে যে, তুমি একটা বিচ্ছিরি ব্যাঙ হয়েও আমার সাথে খেলতে চাও ? আমি কোনো বিচ্ছিরি ব্যাঙের সাথে খেলা করি না। বলে রাজকন্যা রাগে গর গর করতে করতে প্রাসাদে ফিরে এল। পরের দিন রাজকন্যা আবার বাগানে খেলতে গেল। মাটিতে বল ছুড়ে ছুড়ে খেল